বাংলাদেশের পাহাড়, ঝর্ণা আর মেঘের এক অবিশ্বাস্য মিলনমেলা হলো বান্দরবান। দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গগুলো এই জেলাতেই অবস্থিত। আপনি যদি ২০২৬ সালে একটু রোমাঞ্চকর এবং চ্যালেঞ্জিং ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন, তবে বান্দরবান আপনার তালিকার শীর্ষে থাকা উচিত।
কেন বান্দরবান যাবেন? বান্দরবান মানেই অ্যাডভেঞ্চার। এখানে আপনি মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলতে পারেন নীলগিরিতে, আবার আকাশ ছোঁয়া দোলনায় দুলতে পারেন নীলাচলে। বগা লেকের রহস্যময় সৌন্দর্য আর নাফাখুমের মতো জলপ্রপাতের বুনো রূপ দেখার জন্য বান্দরবান সেরা। এখানকার আদিবাসী সংস্কৃতি এবং জীবনধারা আপনাকে নতুন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করবে।
ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায় (২০২৬ আপডেট)
২০২৬ সালে ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য বাসই সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম, তবে ট্রেনের ব্যবহারও বেড়েছে।
১. সরাসরি বাস: ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য সরাসরি এসি এবং নন-এসি বাস সার্ভিস রয়েছে। শ্যামলী, হানিফ, সেন্টমার্টিন পরিবহন বা দেশ ট্রাভেলসের বাসগুলো আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করে। ঢাকা থেকে বাসে যেতে সময় লাগে প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা।
২. ট্রেন ও বাস কম্বিনেশন: যারা ট্রেন ভ্রমণ পছন্দ করেন, তারা ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী ‘সোনার বাংলা’ বা ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’-এ করে চট্টগ্রাম স্টেশনে নামতে পারেন। সেখান থেকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে ‘পূরবী’ বা ‘পূর্বাণী’ বাসে করে ২ ঘণ্টার মধ্যে বান্দরবান পৌঁছানো যায়। এটি অনেকের কাছে বেশ আরামদায়ক মনে হয়।
ভ্রমণ বাহন (অভ্যন্তরীণ): বান্দরবান শহরে পৌঁছে দর্শনীয় স্থানগুলো দেখার জন্য আপনাকে অবশ্যই ‘চান্দের গাড়ি’ (ফোর-হুইল ড্রাইভ জিপ) ভাড়া করতে হবে। পাহাড়ি উঁচু-নিচু রাস্তায় এই গাড়িতে চড়া ভ্রমণের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
কোথায় থাকবেন? বান্দরবানে থাকার জন্য এখন বিশ্বমানের রিসোর্ট রয়েছে।
- লাক্সারি: পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ‘সাইরু হিল রিসোর্ট’ এখন পর্যটকদের স্বপ্নের গন্তব্য।
- আর্মি রিসোর্ট: নীলগিরি রিসোর্ট (সেনাবাহিনী পরিচালিত) মেঘের রাজ্যে থাকার সেরা জায়গা, তবে অনেক আগে বুকিং দিতে হয়।
- শহরের হোটেল: বান্দরবান শহরেই হোটেল নাইট হেভেন বা হিল ভিউ-এর মতো ভালো মানের হোটেল পাওয়া যায় যা বেশ সাশ্রয়ী।
জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহ:
- নীলগিরি: বাংলার দার্জিলিং খ্যাত, যেখানে মেঘ হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়।
- নীলাচল: সূর্যাস্ত দেখার জন্য এবং আকাশ ছোঁয়া দোলনার জন্য বিখ্যাত।
- বগা লেক: পাহাড়ের অনেক উঁচুতে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি রহস্যময় এক হ্রদ।
- নাফাখুম ও অমিয়াখুম: জলপ্রপাত দেখতে হলে ট্রেকিং করে এখানে যেতে হয়।
- স্বর্ণ মন্দির: বুদ্ধ ধাতু জাদি বা গোল্ডেন টেম্পল।
ভ্রমণ টিপস: বান্দরবানের অনেক গহীন স্পটে যেতে হলে স্থানীয় গাইড নেওয়া বাধ্যতামূলক। পাহাড়ি রাস্তায় জিপে চড়ার সময় সতর্ক থাকবেন। কিছু কিছু জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না, তাই আগে থেকেই প্রস্তুুতি নিয়ে রাখা ভালো।