কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর বর্তমানে বাইকার এবং একদিনের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। স্বচ্ছ জলরাশি, পানির মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া সুন্দর রাস্তা এবং খোলামেলা পরিবেশের জন্য এটি এখন “ভাইরাল” টুরিস্ট স্পট। ২০২৬ সালে রাস্তাঘাটের উন্নয়নের ফলে ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে দিনেই ঘুরে আসা সম্ভব।
কেন নিকলী হাওর যাবেন? যান্ত্রিক জীবন থেকে একদিনের ছুটি নিতে চাইলে নিকলী সেরা অপশন। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো নিকলী বেড়িবাঁধের রাস্তা। দুই পাশে পানি আর মাঝখানে পিচ ঢালাই রাস্তা দিয়ে হাঁটা বা রিকশায় ঘোরার অনুভূতি অসাধারণ। বিশেষ করে বর্ষাকালে এর রূপ বহুগুণ বেড়ে যায়।
ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায় (২০২৬ আপডেট)
নিকলী যাওয়া এখন অনেক সহজ। বিশেষ করে যারা বাইক রাইড পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি স্বপ্নের রাস্তা।
১. ট্রেন ভ্রমণ: ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য কমলাপুর থেকে ‘এগারোসিন্ধুর প্রভাতী’ বা ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেন রয়েছে। ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ শহরে বা গচিহাটা স্টেশনে নেমে সেখান থেকে সিএনজি বা অটোতে করে সরাসরি নিকলী বেড়িবাঁধে যাওয়া যায়। সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
২. বাইক বা বাস: ঢাকা থেকে বাইকে গেলে ভৈরব বা কাপাসিয়া রুট দিয়ে যাওয়া যায়। রাস্তার কন্ডিশন ২০২৬ সালে বেশ ভালো, তাই লং ড্রাইভের জন্য এটি সেরা। বাসে যেতে চাইলে গোলাপবাগ বা মহাখালী থেকে কিশোরগঞ্জগামী বাসে (অনন্যা বা যাতায়াত পরিবহন) উঠে কটিয়াদী বা কিশোরগঞ্জ নেমে সিএনজিতে নিকলী যেতে হবে।
কোথায় থাকবেন? নিকলী মূলত ডে-ট্রিপের (Day Trip) জন্য জনপ্রিয়। তবে আপনি যদি রাতে থাকতে চান, তবে এখন হাওরের পাড়ে বেশ কিছু আধুনিক কটেজ ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে।
-
চেয়ারম্যানের বাড়ি/গেস্ট হাউজ: থাকার জন্য বেশ ভালো ব্যবস্থা।
-
হোটেল উজানভাটি: কিশোরগঞ্জ শহরের ভালো মানের হোটেল।
-
ক্যাম্পিং: হাওরের মাঝে ছাতিয়ান চরে তাবু টানিয়ে ক্যাম্পিং করার সুযোগ রয়েছে, যা তরুণদের খুব প্রিয়।
জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহ:
-
নিকলী বেড়িবাঁধ: সূর্যাস্ত দেখার এবং আড্ডা দেওয়ার মূল জায়গা।
-
ছাতিয়ান চর: পানির মাঝখানে ভাসমান জঙ্গল ও গ্রাম। নৌকায় করে এখানে ঘুরতে যাওয়া যায়।
-
অষ্টগ্রামের মিঠামইন রোড: নিকলী থেকে একটু দূরে হলেও, হাওরের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া এই রাস্তাটি “অল ওয়েদার রোড” নামে পরিচিত এবং দেখতে অবিশ্বাস্য সুন্দর।
ভ্রমণ টিপস: নিকলী ভ্রমণের সেরা সময় বর্ষাকাল (জুলাই-অক্টোবর)। তখন পানি থৈ থৈ করে। নৌকা ভাড়া করার সময় অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট আছে কিনা দেখে নেবেন এবং দরদাম করে নেবেন।